ভালোভাবে
বাঁচতে চাওয়াটা সব মানুষের মৌলিক অধিকার, আর এই ভালোভাবে বেচে থাকার জন্যে একটা মানুষের
যা যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা হওয়াটা ও অতীব দরকার। সুন্দর এবং সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকা আমাদের কাছে দুর্লভ এক বস্তুতে পরিনত হয়েছে। আর এর পিছনে যে বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ
তা প্রায় অবহেলিত বললেই চলে। শুধুমাত্র মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো বিশেষ করে অন্ন, বস্ত্র,
বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবা এবং কর্মসংস্থান এটার ব্যবস্থা এবং মান যদি সরকার
নিশ্চিত করতে পারে তাহলে সেই দেশে আর অসুস্থ্য মানুষের জন্ম হতে পারেনা। আর সেই সুস্থ্য
সবল মানুষগুলো দেশের জন্য ভাববে, সমাজের মংগলের জন্যে ভাববে, সর্বপরি এর মাধ্যমে নিজের
কল্যানের কথা ও ভাববে। একটি সুস্থ্য, সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মানে এর অপরিহার্য্যতা
অনিবার্য্য। একটি সুস্থ্য, সবল ও প্রশিক্ষিত জাতি কখনো একটি দেশের দায় হতে পারেনা,
তারা নিশ্চিত রুপে দেশের সম্পদ, যা দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা
পালন করে। নিন্মে এক এক করে এর বর্তমান অবস্থা ও এর উত্তোরনের পথ নিয়ে বিস্তারিত
উল্লেখ করা হলো।
১। অন্নঃ যা আমাদের বাঁচতে এবং নিজের শারীরিক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত এই খাদ্য যোগান এবং সেই খাদ্যের গুনগত মান নিশ্চিত করা আমাদের জন্য খুবই দরকার। আমরা দেখছি আমরা অকালে দুর্বল হয়ে পড়ছি, কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি, অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি এর জন্যে কিন্তু এই ভেজাল খাদ্যেই দায়ী। আমরা দেখছি যেখানে আমাদের দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানিরা আশির পরও সুন্দরভাবে চলাফেরা করতে পারছে, যেখানে জো বাইডেন ৭৭ বছর বয়সে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়ে দেশের সেবা করছেন। সেখানে আমরা ৪০ পেরোলেই ডাক্তারের পেছনে সিরিয়াল নেয়ার জন্যে লাইনে দাঁড়াতে হয় প্রতি নিয়ত। তাহলে একবার ভাবুন কিসের কারনে আমাদের এই দুর অবস্থা খাদ্য উৎপাদনে বিভিন্ন রসায়নিক সারের বা কীটনাশকের ব্যাবহার, বাজারজাত করনের ক্ষেত্রে খাদ্য সতেজ রাখার কৃত্রিম ব্যাবস্থা । যে বা যাহারা এই ব্যাবস্থার সাথে জড়িত তারা শুধু আমার একার ক্ষতি করছেনা তারা পুরো জাতির ক্ষতি করছে, যা কখনো পুরোনীয় নয়। আপনি শুধুমাত্র একবার ভাবুন, আপনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে আপনার পরিবারের বেঁচে থাকার জন্যে খাদ্য কিনে আনলেন সেই খাদ্যে খেয়ে আপনি এবং আপনার প্রিয় মানুষগুলো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতি নিয়ত।
আমাদের সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে সহযোগিতার মানসিকতা নিয়ে, মানহীন এবং ভেজাল খাদ্য আমরা কখনো আমাদের অপর ভাইকে খাওয়াব না। আমরা সবাই জানি বাংলাদেশ সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছে, যেমন ভেজালবিরোধি খাদ্য অভিযান চলছে, মানহীন খাবার বিরোধি অভিযানও চলছে বিভিন্ন স্থানে, তারপর ও কিন্তু এই খাদ্যে ভেজাল থামছেই না। এতে বুঝা যায় এদেরকে বিরুদ্ধে দেশের সকল মানুষকে একতাবদ্ধ হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে এবং পাশাপাশি এদেরকে সামাজিকভাবেও বয়কট করতে হবে। আমি নিশ্চিত, আপনি আমি সবাই যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়ে এক কাতারে দাঁড়িয়ে যাবো তখন দেখবেন ও ব্যাক্তি নিজে নিজেই সংশোধন হতে বাধ্য হবে। আশাকরছি মাননীয় সরকার, এর বিরুদ্ধে আরো কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
২। বস্ত্রঃ অন্নের পাশাপাশি বস্ত্র ও আমাদের জীবনে অনর্স্বীকার্য একটি প্রসংগ, যাকে ছাড়া আমরা নিজেকে কল্পনা করতে পারিনা। বিলাসজাত বস্ত্র ব্যাতিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বস্ত্রসামগ্রী মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখটা অতীব জরুরী একটা বিষয়, যাতে সকল নাগরিক অন্ততপক্ষে বস্ত্র নিবারনের জন্যে তার আয়ের বিশাল একটা অংশ বিলিয়ে দিয়ে না হয়। এক্ষেত্রে উৎপাদন খরচের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মধ্যস্বত্বভোগীদের অযাচিত মুনাফা লাভের বিষয়টা মাথায় রেখে সরকার একটা সুন্দর মানানসই একটা নীতিমালা প্রণয়ন করে সেটা কঠোর হস্তে বাস্তবায়ন করতে পারে। অন্ততপক্ষে আমরা সবাই এটাই মাথায় রেখে দেশের মানুষের সেবার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসি আর আমরা খেটে খাওয়া মানুষগুলোকে আমাদের সামনে রেখে আমাদের নীতিমালা প্রনয়ন করি, তাহলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সুন্দর একটি সমাজ বিনির্মানে সরকার সফল হবে।
চলবে