আমরা সকলেই এই দুই দিনের সুবিধা লাভের জন্যে মরিয়া, প্রতিটি ব্যাক্তি তার স্বীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন বিষয় নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবতে পারছেনা। যেভাবেই হোক আমার স্বার্থটা আগে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রযোজ্য। আমরা এই অনৈতিক মনমানষিকতা থেকে বের হতেই পারছিনা। আর আমরা যদি এর থেকে পরিত্রাণ না পাই, তাহলে সমাজ এবং জাতির উন্নতি নিয়ে কিভাবে ভাববো।
আজকে আমরা কথা বলবো, আমাদের দেশের বিশেষ এক শ্রেণীর মানুষকে নিয়ে। যারা সব সময় অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায়, মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। ওজনে কম দেয়া, পন্যের ভেজাল দেয়া, পচনশীল দ্রব্যে রসায়নিক দ্রব্যে মিশ্রিত করা, মজুতদারীতা করা, বিভিন্ন অকেশনালি হঠাৎ করে পন্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতিমাত্রায় মুনাফা লাভ করা।
কিন্তু তারা যদি বিন্দুমাত্র বুঝতো তাদের এই অর্জন একদিন
তাদের প্রয়োজনে কোন কাজে আসবেনা, একটু অনুধাবন করার মত আল্লাহ পাক যদি অন্তরের মহরখানা
সরিয়ে দিতেন, তাহলে তারা কখনো এহেন কর্ম সাধন করত কিনা সন্দেহ ছিল। তাদের প্রতি
সনিবদ্ধ অনুরোধ থাকবে নিম্মোক্ত কোরানের আয়াত সমুহ অধ্যায়ন ও অনুধাবন করার।
আল্লাহ বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ।
এরা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন মেপে দেয় তখন কম
করে দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে? সেই মহাদিবসে যেদিন
মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব প্রতিপালকের সামনে।’ (সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৬)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা সঠিক ওজন কায়েম করো এবং
ওজনে কম দিও না। ’ (সুরা রহমান, আয়াত : ৭-৯)। অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তোমরা মাপ ও ওজন
পূর্ণ করে দাও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে। আমরা কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কষ্ট দিই না।’
(সুরা আনআম, আয়াত : ১৫২)।
পরিমাপে ও ওজনে কম দেওয়ার ফলে আল্লাহ তাআলা ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেন
ও দুর্ভিক্ষ দেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা মাপে কম
দেয়, যারা মানুষের কাছ থেকে ওজন করে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে, আর যখন
মানুষকে মেপে কিংবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়। ’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত : ১-৩)
রাসুল (সা.) একবার পরিমাপকারী ও দাঁড়িপাল্লা দ্বারা ওজনকারী
ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘তোমাদের ওপর এমন দুইটি জিনিসের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যে
জিনিস দুইটির দায়িত্ব পালনে অবহেলা করার কারণে তোমাদের আগের উম্মত ধ্বংস হয়ে
গিয়েছিল। ’ (তিরমিজি)
অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘বিচারের দিনে (অসৎ) ব্যবসায়ীদের হাশর হবে ফাসিক, কাফির ও
বদকারী হিসেবে, তবে তাদের মধ্যে যারা মুত্তাকি, পুণ্যবান ও সত্যবাদী, তাদের এমনটি
হবে না। (মিশকাত, পৃষ্ঠা নং : ২৪৪)
পরিশেষে, আপনার আমার সবার জন্যে দোয়া থাকলো, আল্লাহ পাক
রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করেন। দুনিয়াবী ক্ষনস্থায়ী লাভের
চেয়ে যেন পরোকালের লাভের চিন্তায় বেশী মগ্ন করে তোলেন। আখেরাতের পাওনার প্রতি
আমাদের আকর্ষন যেন বাড়িয়ে দেন, আমিন।
No comments:
Post a Comment