Tuesday, July 26, 2022

পরিবর্তন মানষিকতার

আমরা সকলেই এই দুই দিনের সুবিধা লাভের জন্যে মরিয়া, প্রতিটি ব্যাক্তি তার স্বীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন বিষয় নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবতে পারছেনা। যেভাবেই হোক আমার স্বার্থটা আগে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রযোজ্য। আমরা এই অনৈতিক মনমানষিকতা থেকে বের হতেই পারছিনা। আর আমরা যদি এর থেকে পরিত্রাণ না পাই, তাহলে সমাজ এবং জাতির উন্নতি নিয়ে কিভাবে ভাববো।


আজকে আমরা কথা বলবো, আমাদের দেশের বিশেষ এক শ্রেণীর মানুষকে নিয়ে। যারা সব সময় অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায়, মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। ওজনে কম দেয়া, পন্যের ভেজাল দেয়া, পচনশীল দ্রব্যে রসায়নিক দ্রব্যে মিশ্রিত করা, মজুতদারীতা করা, বিভিন্ন অকেশনালি হঠাৎ করে পন্যের দাম বাড়িয়ে দিয়ে অতিমাত্রায় মুনাফা লাভ করা।


কিন্তু তারা যদি বিন্দুমাত্র বুঝতো তাদের এই অর্জন একদিন তাদের প্রয়োজনে কোন কাজে আসবেনা, একটু অনুধাবন করার মত আল্লাহ পাক যদি অন্তরের মহরখানা সরিয়ে দিতেন, তাহলে তারা কখনো এহেন কর্ম সাধন করত কিনা সন্দেহ ছিল। তাদের প্রতি সনিবদ্ধ অনুরোধ থাকবে নিম্মোক্ত কোরানের আয়াত সমুহ  অধ্যায়ন ও অনুধাবন করার।

 

আল্লাহ বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ। এরা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন মেপে দেয় তখন কম করে দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে? সেই মহাদিবসে যেদিন মানুষ দাঁড়াবে বিশ্ব প্রতিপালকের সামনে।’ (সূরা মুতাফফিফিন, আয়াত: ১-৬)

 

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা সঠিক ওজন কায়েম করো এবং ওজনে কম দিও না। ’ (সুরা রহমান, আয়াত : ৭-৯)। অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘তোমরা মাপ ও ওজন পূর্ণ করে দাও ন্যায়নিষ্ঠার সঙ্গে। আমরা কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত কষ্ট দিই না।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১৫২)।

 

পরিমাপে ও ওজনে কম দেওয়ার ফলে আল্লাহ তাআলা ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দেন ও দুর্ভিক্ষ দেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা মাপে কম দেয়, যারা মানুষের কাছ থেকে ওজন করে নেওয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে, আর যখন মানুষকে মেপে কিংবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়। ’ (সুরা মুতাফফিফিন, আয়াত : ১-৩)

 

রাসুল (সা.) একবার পরিমাপকারী ও দাঁড়িপাল্লা দ্বারা ওজনকারী ব্যবসায়ীদের বলেন, ‘তোমাদের ওপর এমন দুইটি জিনিসের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যে জিনিস দুইটির দায়িত্ব পালনে অবহেলা করার কারণে তোমাদের আগের উম্মত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ’ (তিরমিজি)


অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘বিচারের দিনে (অসৎ) ব্যবসায়ীদের হাশর হবে ফাসিক, কাফির ও বদকারী হিসেবে, তবে তাদের মধ্যে যারা মুত্তাকি, পুণ্যবান ও সত্যবাদী, তাদের এমনটি হবে না। (মিশকাত, পৃষ্ঠা নং : ২৪৪)

 

পরিশেষে, আপনার আমার সবার জন্যে দোয়া থাকলো, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের সবাইকে হেদায়াত দান করেন। দুনিয়াবী ক্ষনস্থায়ী লাভের চেয়ে যেন পরোকালের লাভের চিন্তায় বেশী মগ্ন করে তোলেন। আখেরাতের পাওনার প্রতি আমাদের আকর্ষন যেন বাড়িয়ে দেন, আমিন।  

Friday, July 15, 2022

আরিয়ান খান (ধারাবাহিক পর্ব)

 

২য় পর্বঃ

দক্ষিণ হালিশহরে ও দীর্ঘদিন থাকা হয়ে উঠেনি বিশেষ কোন কারন ছিলোনা। তবে হালিশহরে আমার মা কিছু জমি কিনেছিলো আমার বড় আব্বু থেকে মানে উনার দুলাভাই থেকে। যে জমিতে ঘর বাঁধতে গিয়ে বাড়ির মাতব্বর শ্রেণীর লোকের চক্ষুশূলে পরিনত আমার সহজ সরল বাবা। এতই সহজ সরল ছিলো ঝামেলা একদম পছন্দ করতনা। আর অন্যদিকে এলাকার তৎকালীন পাতি নেতারা দল বেধে বাবাকে একদিন রাস্তায় আটকিয়ে হুমকি দিয়ে বসল। এলাকায় দেখলে মেরে ফেলবে, নলা কেটে হাতে ধরিয়ে দেবে ইত্যাদি। বাবা একটু ভীতু মানুষও ছিলো বটে, ঠিক আমার মতো, মা প্রায় বলে। আমি একে ভীতু বলতে একদম নারাজ, কেউ যদি ঝামেলা জঞ্জাটহীন জীবন পছন্দ করে, সবাইকে বিশ্বাস করে, তাকে সহজ-সরল সাদা-সিদে নিরেট ভদ্রলোক বলা যায়। ভীতু বলে তাদেরকে অপমান করার কোন অধিকার নেই, খারাপের মাঝে কিছু ভালো মানুষ যদি থেকেই থাকে তাদেরকে দোষ দেয়া যায়না, সমাজ কলুষিত হয়েছে বলে ভালো মনের সহজ সরল মানুষগুলোকে ভীতু বলে এই দলে আমি নই। তবে মুশকিল হলো ভদ্রলোক হলে আজকাল মানুষ আপনাকে প্রতি পদে পদে ঠকাবে, আপনার জন্যে প্রতিটি মোড়ে মোড়ে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে থাকবে আর আপনি এই ফাঁদে না পড়ে কোন উপায় নেই। তাই আমাদের এই সমাজে তখন থেকেই এটি একটি দূর্বলতা হিসাবে মূল্যায়ন করা হয়। এরি ধারাবাহিকতায় বাবা একদিন নিজের জমির মায়া ছেড়ে সবার অজান্তে হারিয়ে গেলেন, বাবা এলাকায় যাওয়া বন্ধ করে দিলেন এবং মাকেও এব্যাপারে কিছু বললেন। বুকের জমানো সব কষ্ট একাই বয়ে বেড়ানো সিদ্ধান্ত নিলেন আর এই জন্যে তিনি সবার চোখের আড়াল হওয়ার চেষ্টা চালালেন। পরে মা আর ছোট্ট ছেলেটা তাদের স্বামী এবং বাবাকে খুজে বের করলেন, নিজ বাসভূমে না যাওয়ার রহস্য উন্মোচন করলেন। মাও সেদিন সিদ্ধান্ত নিলেন স্বামী আর সন্তানদেরকে নিয়ে অন্য কোথায় সপ্নের ঘর বানাবেন, সেখানে এক সাথে সুখে দুখে পাশে থেকে জীবনের বাকিটা সময়টা কাটাবেন।

 

যাযাবরদের স্থান পরিবর্তনের যাত্রা আবার শুরু হবে নির্ধারিত হলো তবে ছোট মানুষ হিসাবে আমাকে এবং আমার ছোট্ট বোনকে কিছু জানানো হলোনা। ও আপনাদের বলা হয়নি আমার ফুটফুটে চাঁদের মত সুন্দর একটা বোন ছিল ও আমার ছোটই ছিলো অনেক আদরের বোন ছিলো আমার। পৃথিবীতে ভাই বোনের অনেক সুন্দর এবং পবিত্র এক রক্তের বন্ধন যেটি আপনি হয়তো আর কোথাও খোঁজে পাবেন না। আর সেই সুত্র ধরে প্রতিটা বোন তার ভাইয়ের কাছে আর প্রতিটা ভাই তার বোনের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং ভালো এবং আদর্শ একজন মানুষ। আর যে সব সময় চাঁদের মত ফুটফুটে সুন্দরই হয়। ওর নাম তো আপনাদের এখনো বলা হয়নি, ওর নাম ছিল মানিজা, কি নামটা সুন্দর না অনেক?

 

চলবে……

Saturday, July 9, 2022

আরিয়ান খান

আমি আরিয়ান খান, বয়স এখন আনুমানিক চল্লিশের কাছাকাছি। আমার জন্ম চট্টগ্রাম শহরের ছোট্ট এক পাহাড়ি এলাকায় যেটাকে সি আর বি বলে, তখনো বলা হতো । তখনকার সি আর বি আজকের মত এতটা প্রসিদ্ধ ছিলনা। সি আর বি এখন অনেক প্রানবন্ত প্রতিদিন মানুষের কোলাহলে মুখরিত থাকে, কেননা বর্তমানে সি আর বি চট্টগ্রাম শহরের একটি বিনোদন কেন্দ্র তথা ফ্রিতে বসে সময় কাটানোর জায়গা, বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর এক মনোরম স্থান। প্রতি বছর এখানে বৈশাখী মেলা হয়, পহেলা বৈশাখে ইংরেজি মাসের ১৪ ই এপ্রিল। এছাড়াও বিভিন্ন দিবসে এটি থাকে জন মানবে সরব একটি স্থান। বাবা চাকরী করতেন তৎকালীন চীপ মেডিকেল অফিসার অব রেলওয়ে বাংলাদেশ চট্টগ্রাম এর অধীনে। আপনারা হয়তো ভাবছেন আমার বাবা অনেক বড় সরকারী চাকরিজীবী ছিলেন, না আমার বাবা মোটেও খুব বড় বা মাঝারি কিংবা ছোট মানের অফিসার ছিলেন না, আব্বু তখন সি এম ও এর অধীনে উনার ব্যাক্তিগত গাড়ীর চালক ছিলেন। জন্মের পরে শৈশবকাল ভালোই কাটছিল আমার, আমি বাবা মার একমাত্র আদরের সন্তান ছিলাম। আব্বু আম্মু দুজনেই প্রচন্ড রকম আদর করতেন যা চাইতাম কিংবা যা বায়না দরতাম দেয়ার মত হলে, উনারা সেটা ব্যবস্থা করে দিতেন। আর আমিও মানুষের কাছে যা দেখতাম তা চাইতাম। ভাগ্যিস আমাদের সোসাইটি খুব বেশী রীচ ছিলনা তাই বাবা মাও পার পেয়ে গেছেন মনে হচ্ছে, নয়তো কি না কি দেখতাম আর ওটাই চেয়ে বসতাম। সেটার এক জলজ্যান্ত প্রমান হলো একদিন সিরাজ আংকেল ছেলে, মকবুল ছিলো ওর নাম, সে একটি পেয়ালায় ভরে ভাতের মাড় খাচ্ছিলো। আমি যেই দেখলাম অমনি আমি ভাতের মাড় খাবো মাড় খাবো বলে কান্নাকাটি করতে শুরু করে দিলাম, মাও আমার নিরুপায় হয়ে ভাত রান্না করে, ভাতের মাড় দিতে হলো।  

 

ছোট ছিলাম অনেক, আমার আনন্দঘন শৈশবকাল খুব বেশীদিন স্থায়ী হলোনা। কোন একজন অজানা রুলস এর কারনে আব্বুর চাকরীটা চলে গেলো। আপনারা হয়তো ভাবছেন বাবাকে চাকরী থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে কোন ব্যাক্তিগত দোষ ত্রুটির কারণে, না সেটা কখনো হবার ছিলোনা কারণ আমার বাবা ছিলেন আমার দেখা সবচেয়ে নম্র ভদ্র স্বভাবের একজন মাটির মানুষ বলা যেতে পারে। উনি তৎকালীন এরশাদ সরকারের আইন কানুনের মারপ্যাঁচ পড়ে অবসরে চলে যেতে বাধ্য হন। যাই হোক কষ্ট করে রশিদ সাহেব নামের এক ভদ্রলোক মিমি সুপারের পিছনে বাসা ছিলো, উনার ওখানে চাকরী নিলে। আর আমরা চলে গেলাম হালিশহর নামক এক প্রত্যান্ত অঞ্চল বন্দরটিলায়। এখন অবশ্যই হালিশহর কিংবা বন্দরটিলা সবার কাছে অনেক পরিচিত কারন পাশেই আছে দু-দুটো ইপিজেড একটি হলো সিইপিজেড অপরটি হলো কেইপিজেড, এই দুটি সুপরিচিত অঞ্চলের মাঝামাঝি অবস্থান হওয়ার কারণে বন্দরটিলা এলাকাটা ও খুব চেনা জানা পরিচিত হয়ে উঠলো। তবে এটি অন্য কোন কারণে নয় ভাড়া ঘরের জন্যে বিখ্যাত হয়ে উঠলো সবচেয়ে বেশী। ধরে নিতে পারেন গাজিপুর কিংবা সাভারের আশে পাশের জায়গা যেমনটা মুল্যবান এখন ঠিক তেমনি বন্দরটিলাও। তবে মানুষগুলো আগে যা ছিলো এখনো তাই আছে স্বভাব তাদের কিঞ্চিত পরিমান ও বদলায়নি, যদিও টাকা পয়সা হয়েছে অনেক।  

 

ওখানে আমাদের বড় খালামনি থাকতো যাকে আমি বড় আম্মু আর বড় খালুকে বড় আব্বু বলেই ডাকতাম। বাবা মায়ের পরে উনারাই আমার সবচেয়ে আপন এবং প্রিয় মানুষ ছিলেন। বাবা চাকরী ঠিক করে কিছুদিন পর আমাদের সাথে থাকতে শুরু করলেন। আমাদের তিনজন পরিবার এখন পাঁচ জনের সুন্দর একটি পরিবারে রূপ নিল। ও একটা কথা বলা হয়নি বড় আম্মুর গর্ভে কোন সন্তান ছিলোনা তাই জন্মের সময় বড় আম্মু আম্মুকে বলেছিল আমাকে যেন উনাকে একবারে দত্তক দিয়ে দেয়, দুই বোনের ভিতর একটা অলিখিত চুক্তি হলো। একজনের আমি পালকপুত্র অন্যজনের আপন। এইভাবেই আমার দিন কেটে যাচ্ছে। বড় আব্বু বড় আম্মুকে বিয়ে করার পুর্বে আরো দুটো বিয়ে করেছিলেন, একজন স্ত্রী মারা যাওয়ার পর উনি আরেকটা বিয়ে করেছিলেন। দুজনের ঘরে দুটো মেয়ে আছে, দুজনের স্বভাব দুরকম ছিলো একজন ছিল খুব শান্ত আরেকজন ভীষন রকম ফাজিল এবং দুষ্ট। এই ফাজিল এবং দুষ্ট মেয়ের মাকে তালাক দিয়ে বড় আব্বু আমার বড় আম্মুকে বিয়ে করেন। বড় আব্বু এক সময় জাহাজের সুকানী ছিলেন, তবে আমি যখন উনাকে পাই তখন একেবারে অবসরে চলে গেলেন। চাকরী বাকরি কিছুই নাই, মানুষের ছেলে মেয়েদের কোরান শিক্ষা দিতেন আর বিনিময়ে আর যা পেতেন তা দিয়ে উনার সংসার চলতো। বাবা আসার পর উনাদের পরিবারে একটা স্বাচ্ছন্দ্য ফিরে আসলো। আমরা খুব  ভালো ভাবেই দিন কাটাচ্ছি আর বড় মেয়েটা উনার ছেলে মেয়েদের প্রায় বেড়াতে আসতেন আমাদের ওখানে। তখন মেহমান দেখলে আমার অসম্ভব রকম ভালো লাগতো আমি ও মনে মনে চাইতাম মেহমান না চলে যায়। দু-তিন থেকে ওরা চলে যেতো, আর অমনি আমার মনটাও ভীষন খারাপ হয়ে যেতো।  

Apple MacBook Pro 14 M4 Review: Performance, Features, and Price Comparison

  Introduction The Apple MacBook Pro 14 (M4) is designed to cater to professionals and content creators, offering powerful features and...